বাংলাদেশের বিমা খাত এখন শীর্ষ পাঁচটি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে। সম্পদ ও প্রিমিয়ামের সিংহভাগ এই প্রতিষ্ঠানগুলোর দখলে থাকায় পুরো খাত ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন-এ বলা হয়েছে, এসব কোম্পানির অতিরিক্ত প্রভাব প্রতিযোগিতা কমিয়ে দিয়েছে এবং খাতে পদ্ধতিগত ঝুঁকি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জীবন বিমা খাতে মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৭৭ শতাংশ অর্থাৎ ৩৭ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা নিয়ন্ত্রণ করছে শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠান। একইভাবে, প্রিমিয়ামেরও ৬৫ শতাংশের বেশি তাদের দখলে। সরকারি প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা করপোরেশন একাই ৬.৪৫ শতাংশ সম্পদ এবং ৭.০১ শতাংশ প্রিমিয়াম নিয়ন্ত্রণ করছে।
অন্যদিকে, নন-লাইফ বিমা খাতে সম্পদ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকার সম্পদ (৬২.৬৭ শতাংশ) এবং ৫৬.০২ শতাংশ প্রিমিয়াম শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে। সরকারি প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশন একাই ৪২.১৭ শতাংশ সম্পদ এবং ২৭.১০ শতাংশ প্রিমিয়াম দখলে রেখেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সম্পদ ও প্রিমিয়ামের অতিরিক্ত ঘনত্ব প্রতিযোগিতার পরিবেশ সীমিত করে দিচ্ছে এবং কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াচ্ছে। খাতটি এককভাবে পরিচালিত হলেও এর কর্মকাণ্ড সরাসরি যুক্ত ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মূলধন বাজার ও বন্ড বাজারের সঙ্গে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন—এই পরিস্থিতি টেকসই নয়। শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে কোনো একটিতে বড় ধরনের সংকট তৈরি হলে পুরো বিমা খাত নাড়িয়ে দিতে পারে, যা সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।